অর্জুন শারীরিকভাবে কতোটা শক্তিশালী ছিলেন ?

0

অর্জুন শারীরিকভাবে কতোটা শক্তিশালী ছিলেন ?

শুরু করার আগে আপনাদের নিকট বিনীত অনুরোধ । মহাভারত সম্পর্কে জানার ইচ্ছা থাকলে মহাভারত পড়ুন, দয়া করে সিরিয়াল দেখতে যাবেন না । তাহলেই সর্বনাশ!!

অর্জুন শারীরিকভাবে কতোটা শক্তিশালী ছিলেন ?

অর্জুন যে শুধু ধনুর্বিদ্যায় ভালো ছিলেন তা নয় । তিনি গুরুকুলেই সমস্ত অস্ত্রে পারদর্শী ছিলেন বলে মহাভারতে কথিত আছে এবং সেখানেই তাকে অতীরথী বলে অভিহিত করা হয়েছিল ।

কর্ণ নাকি অর্জুন, শারীরিকভাবে কে বেশি শক্তিশালী

সোনি টিভিতে সূর্যপুত্র কর্ণ সিরিয়াল দেখে অনেকেই ইদানীং মন্তব্য করছে যে কর্ণ নাকি একাই পঞ্চপান্ডবদের সমান ছিলেন । আজ মহাভারত থেকেই প্রমাণ করবো কর্ণ অর্জুনের থেকে শারীরিকভাবে কতোটা দুর্বল ছিলেন ।

অর্জুন সেই ধনুক তুললেন এবং গুণ পড়ালেন, যা শল্য, জরাসন্ধ, দুর্যোধন এবং শিশুপাল এবং কর্ণও তুলতে পারেননি ।

সূত্র:- স্বয়ম্বর পর্ব

তিনি শারীরিকভাবে অত্যন্ত শক্তিশালী ছিলেন । মহাকাব্যের অনেক উদাহরণ থেকে তা স্পষ্ট ।

যদি তিনি শারীরিকভাবে শক্তিশালী না হতেন, তাহলে শ্রী কৃষ্ণ কখনই কুস্তির জন্য জরাসন্ধের সামনে বলতেন না যে আমাদের তিনজনের মধ্যে যে কারো সাথে আপনি মল্যযুদ্ধ করতে পারেন । সেখানে কিন্তু অর্জুনও ছিল । অর্জুনের মধ্যে অবশ্যই জরাসন্ধকে পরাজিত করার বাহুবল ছিল । তা না হলে শ্রীকৃষ্ণের মতো দুরদর্শী লোক অর্জুনের নাম বলতেন না ।

তিনি শিবের কিরাত রূপের সাথে যুদ্ধ করেছিলেন এবং তার গান্ডীব ব্যবহার করে ভগবানকে টেনে এনেছিলেন  ( ভগবান মহাদেবের কৃপায় )। অর্জুন ভগবান মহাদেবের কিরাত রূপের সাথে এক দুর্দান্ত মুষ্টিযুদ্ধ করেছিলেন । মহাদেব তো আর এমনি এমনি অর্জুনের উপর সন্তুষ্ট হন নি!

অগ্নিদেবের গাণ্ডীব ধনুক এতোটাই ভারী ছিল যে, বলা হতো এটি কেবল অর্জুন, কৃষ্ণ বা ভীষ্ম দ্বারা চালিত হতে সক্ষম । কিন্তু অর্জুন গান্ডীব ধনুকের ব্যবহার এমনভাবে করেছিলেন যেটি এর আগে আর কেউই ব্যবহার করতে পারেন নি ।

আরো জানুনঃ অর্জুন নাকি ভীষ্ম কে বেশী শক্তিশালী ?

ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যখন ভীষ্মকে হত্যা করতে উদ্দত হন তখন অর্জুন তার বাহুবল দ্বারা ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে আটকে রাখতে সক্ষম হন ।

ঋষি মৈত্রেয় দুর্যোধনকে বলেছিলেন যে অর্জুনের মধ্যে ১০০০০ হাতির শক্তি রয়েছে ।

প্রসিদ্ধ ঋষি মৈত্রেয় তাকে এই মৃদু শব্দে সম্বোধন করলেন, 'হে পরাক্রমশালী দুর্যোধন, হে প্রসিদ্ধ, আমি যে কথাগুলি উচ্চারণ করি তার প্রতি মনোযোগ দাও । হে মহারাজ, পাণ্ডবদের সঙ্গে যুদ্ধ করো না, কারণ প্রত্যেক পান্ডবদের মধ্যে রয়েছে  দশ হাজার হাতির শক্তি, বজ্রের মতো শক্ত শরীরের গঠন । বন পর্ব


ভগবান শিব অর্জুনের শক্তির প্রশংসা করেছিলেন, খুশি হয়ে বলেছিলেন যে যে অর্জুনের শক্তি প্রায় তার নিজের শক্তির সমান ছিল । কথিত আছে মহাদেব ও অর্জুদের মুষ্টিযুদ্ধের সময় তাদের শরীরের ঘর্ষণে আগুনের ফুলকি বের হচ্ছিলো ।

সাহসে , ধৈর্যে তোমার সমকক্ষ কোন ক্ষত্রিয় নেই, হে পুত্র । হে পাপহীন, তোমার শক্তি এবং পরাক্রম প্রায় আমার সমান । হে পরাক্রমশালী, আমি তোমার প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছি । বন পর্ব

অর্জুনের শারীরিক কৃতিত্ব

অর্জুন সেই ধনুকটিতে গুণ পড়িয়েছিলেন যা শল্য, জরাসন্ধ, রুক্মী, দুর্যোধন, শিশুপাল এবং কর্ণ প্রচণ্ড পরিশ্রম করেও তুলতে পর্যন্ত পারেননি । আদি পর্ব


অর্জুন একটি স্বর্গের কুমিরকে জল থেকে ডানায় তোলেন ।

পুকরে নামার সাথে সাথে একটি বড় কুমির ত তাকে পা ধরে ফেলে । কিন্তু কুন্তীর পুত্র শক্তিশালী ধনঞ্জয় , যে সমস্ত পুরুষের মধ্যে সর্বাগ্রে পরাক্রমশালী, তখন সে জলে থাকা কুমিরিটিকে ধরে ফেলেন এবং জোর করে তীরে টেনে নিয়ে আসেন । বন পর্ব

অর্জুন যুদ্ধের ১০ তম দিনে পা ধরে ভীষ্ম পিতামহকে আক্রমণ করা থেকে শ্রীকৃষ্ণকে দুবার বাধা দিয়েছিলেন ।

ভীষ্মের দিকে দ্রুত গতিতে অগ্রসর হওয়ার সময় অর্জুন শ্রীকৃষ্ণের পা ধরে প্রচণ্ড শক্তিতে আটকে রেখেছিলেন । ভীষ্ম পর্ব

অর্জুন তার গাণ্ডীব ধনুকের গুণ/তার টেনে ছিড়ে ফেলেছিলেন ।

হে রাজা , দুই বীর পরস্পরকে অনেক ভয়ঙ্কর অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলো । হে মহারাজ , ধনঞ্জয় ও অধিরথের পুত্র উভয়ের ধনুকের গর্জনের ফলে পৃথিবী কম্পিত হতে থাকলো ।  একসময় পান্ডুপুত্রের  ধনুকের তার জোরে প্রসারিত হয়ে বিকট শব্দে ছিড়ে গেল । কর্ণ পর্ব: ধারা 89

অর্জুন শারীরিকভাবে তার সময়ের সবচেয়ে শক্তিশালী যোদ্ধাদের মধ্যে একজন ছিলেন।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.
Post a Comment (0)
To Top