প্রতিমা আসলে কী আর প্রতিমা পুজা কেন করা হয় ?

0
প্রতিমা আসলে কী আর প্রতিমা পুজা কেন করা হয় ?

হিন্দু ধর্মে মূর্তি পূজা কেন করা হয় ?

প্রতিমা শব্দটি এসেছে প্রতিমূর্তি শব্দ থেকে। প্রতিচ্ছবি মানে যেমন ছবির প্রতিফলন, তেমনি প্রতিমূর্তি হলো মূর্তির প্রতিফলন বা মূর্তির প্রতিনিধি । কিন্তু কোন মূর্তির প্রতিনিধি ? ঈশ্বরের তো কোনো মূর্তি নেই ।
পরমব্রহ্ম বা ঈশ্বর নিরাকার। যে নিরাকার তাকে ধরতে কিছু সমস্যা আছে এবং সাধারণ মানুষের পক্ষে তাকে বোঝাও সহজসাধ্য নয় । কোনো কিছুর প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে তার কিছু চিহ্ন, প্রতীক বা আকার দরকার; এজন্যই বাস্তবতা মেনে বাংলাদেশে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের জন্য শহীদ মিনার এবং মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের জন্য স্মৃতিসৌধ নির্মান করা হয়েছে । একইভাবে নিরাকার ঈশ্বরের পূজা প্রার্থনার জন্য তার প্রতি নত হওয়ার মাধ্যম হিসেবে ঈশ্বরের প্রতিনিধিস্বরূপ সাকার দেব-দেবীদের কল্পনা করা হয়েছে ।
কারো প্রতিনিধি যেমন সেই ব্যক্তি স্বয়ং নয়, তেমনি সাকার দেব-দেবীরাও স্বয়ং ঈশ্বর নয় । বিভিন্ন দিবস পালনের জন্য যেমন বিভিন্ন তারিখ রয়েছে, সেই নির্দিষ্ট তারিখেই যেমন সেই সম্পর্কিত বিষয়গুলোর আবেগ আমাদের মধ্যে জেগে উঠে এবং সেজন্য আমরা সেই সম্পর্কিত নানা অনুষ্ঠান পালন করি; যেমন- স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, প্রজাতন্ত্র দিবস, ভালোবাসা দিবস ইত্যাদি ইত্যাদি; তেমনি নির্দিষ্ট তিথিতেই ব্যাপকভাবে ও আড়ম্বরপূ্র্ণভাবে ঈশ্বরের প্রতিনিধি হিসেবে দেব-দেবীদেরকে আমরা স্মরণ ও তাদের পূজা প্রার্থনা করি ।
বিজয় বা স্বাধীনতা দিবস একদিন পালন করলেও যেমন আমরা তা সারাবছর ধরে ফিল বা অনুভব করি, একদিন ভালোবাসা দিবস পালন করলেও যেমন আমরা স্ত্রী বা প্রেমিকাকে সারা বছরের প্রত্যেকটা দিনই ভালোবাসি, তেমনি কোনো দেব-দেবীকে বছরে একদিন আড়ম্বরপূর্ণভাবে স্মরণ এবং তার পূজা প্রার্থনা করলেও আসলে ঈশ্বরের প্রতিনিধি হিসেবে তাকে আমরা বছরের প্রত্যেকটা দিনই শ্রদ্ধা করি বা ভালোবাসি । ব্যাপকভাবে সেই শ্রদ্ধাটাকে প্রকাশ করতে এবং পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে তাকে সঞ্চারিত করে তাকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চালু রাখতে শুধু বছরে একবার তার মূর্তি নির্মান করে আমরা তার পূজা প্রার্থনা করি ।
উপরেই বলেছি, দেব-দেবী হলো ঈশ্বরের প্রতিনিধি, স্বয়ং ঈশ্বর নয়; তাই নির্দিষ্ট তিথিতে দেব-দেবীদের পূজা প্রার্থনা শেষে তাকে আমরা জলে ডুবিয়ে বিসর্জন দিয়ে দিই; দেব-দেবীকে যদি আমরা স্বয়ং ঈশ্বর বিবেচনা করতাম তাহলে কখনো তাকে বিসর্জন দিতাম না বা দিতে পারতাম না । কিন্তু মাথামোটা মু*স#ল*মা*ন*রা মনে করে মাটির তৈরি দেব-দেবীকেই আমরা স্বয়ং ঈশ্বর বা তাদের ভাষায় ভগবান বলে মনে করি এবং তার পূজা শেষে তাকে লাথি দিয়ে জলে ফেলে দিই এবং এরপর তারা যে মন্তব্য করে, সেটা হলো- এটা কোনো ধর্ম হলো ?
পৃথিবীতে ধর্ম হলো একটাই, আর সেটা হলো সনাতন মানব ধর্ম বা হিন্দু ধর্ম, বাকিগুলো হলো মতবাদ; কারণ, ঈশ্বরের সৃষ্ট জীবের জন্য ঈশ্বর নিজেই ধর্ম সৃষ্টি করে থাকেন, কোনো মানুষের ক্ষমতা নেই সেই ধর্ম সৃষ্টি করার ।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.
Post a Comment (0)
To Top