ভোগ ও ত্যাগ নিয়ে বিস্তারিত
ভোগে কিংবা ত্যাগে কোনটাতেই শান্তি নাই ।
শান্তি পাওয়ার সূত্রটি ভগবান এইভাবে বলেছেন — গীতা ৫/২৯
ভোক্তারং যজ্ঞ তপসাং সর্বলোকমহেশ্বরম্।
সুহৃদং সর্বভূতানাং জ্ঞাত্বা মাং শান্তিমৃচ্ছতি।।
"আমাকে সমস্ত যজ্ঞ এবং তপস্যার পরম উদ্দেশ্যরূপে জেনে, সর্ব লোকের মহেশ্বর এবং সকলের উপকারী সূহৃদরূপে আমাকে জেনে যোগীরা জড় জগতের দুঃখ - দুর্দশা থেকে মুক্ত হয়ে শান্তি লাভ করেন ।"
অর্থাৎ সব কিছু আয়োজনের ভোক্তা হচ্ছেন কৃষ্ণ, সমস্ত ব্রহ্মান্ডের মালিক হচ্ছেন কৃষ্ণ, সমস্ত জীবের বন্ধু হচ্ছেন কৃষ্ণ। এই তিনটি কথা যে বুঝতে পারবে সে-ই শান্তি লাভ করতে পারবে ।
সমস্ত কিছুর মালিক কৃষ্ণ । বলা হচ্ছে না যে, বদ্ধ জীব কোন কিছুর মালিক । অতএব, কোন জীব শ্রীকৃষ্ণের সম্পদ ভোগ করতে চাইলে সে শাস্ত্রমত দন্ডনীয় হবে । ভোগকারী কৃষ্ণ । আমরা জীব ভোগ করবার কে?
আমাদের সর্বাঙ্গ, আমাদের মস্তিষ্ক,আমাদের জীবনী শক্তি শ্রীকৃষ্ণ দিয়েছেন। আমরা নিজেরা বানাইনি। সমস্ত মাটি জল বায়ু আকাশ বাতাস যেগুলি আমরা ভোগ করছি সেগুলি আমাদের তৈরি করা জিনিস নয়। অতএব আমার বলে কিছু থাকলে তবেই না সেই বস্তু ভোগ করা বা ত্যাগ করার প্রশ্ন আসে। প্রকৃতপক্ষে আমার বলে কিছু নেই ।
আমাদের পরিচয় হচ্ছে "নিত্য কৃষ্ণদাস"। কৃষ্ণের সেবায় যুক্ত হয়ে কৃষ্ণের কৃপার উপর নির্ভর করেই আমাদের থাকতে হয় ।
শ্রীল রূপ গোস্বামী নির্দেশ দিয়েছেন, যথার্হম্ উপযুঞ্জতঃ কৃষ্ণসম্বন্ধে: বিষয়গুলিকে শ্রীকৃষ্ণ সেবায় নিযুক্ত করতে হবে যথার্থভাবে । তিনি আবার বলেছেন —যদি কেউ শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে সম্বন্ধিত বিষয়কে জড় বুদ্ধিতে ত্যাগ করে তবে সেই ত্যাগীবৈরাগী ফল্গু বা ভন্ড বলে পরিচিত হন।
আমাদের গ্রহন করতে হবে কৃষ্ণ ভক্তির অনুকূল বিষয় এবং ত্যাগ করতে হবে কৃষ্ণ ভক্তির প্রতিকূল বিষয়। শান্তি ভোগে বা ত্যাগে নয়, শান্তি কৃষ্ণ ভক্তিতে —কৃষ্ণ সেবায় ।