Table Of Content (toc)
কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়ার উপকারিতা
(এই প্রবন্ধটি শুধুমাত্র নিরামিষ ভোজীদের জন্য, যারা মনে করে পেঁয়াজ রসুন আমিষ খাবার এবং এগুলো গরুর মাংস থেকে উৎপন্ন হয়েছে !
ক্যানসার প্রতিরোধ করে
কাঁচা পেঁয়াজে ক্যানসার-রোধকারী নানা উপাদান রয়েছে । এই কারণে নিয়মিত কাঁচা পেঁয়াজ খেলে ক্যানসারের আশঙ্কা কমে । সুতরাং যারা পেঁয়াজ খাবে না, তাদের ক্যান্সার হয়ে মরার আশঙ্কা বেশী ।
হার্ট ভালো রাখে
পেঁয়াজের কিছু উপাদান কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এতে হৃদযন্ত্র ভালো থাকে। সুতরাং যারা পেঁয়াজ খাবে না, তাদের হার্টের রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশী।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
পেঁয়াজের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন, মিনারেল, ফাইবার যা ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় । এর মধ্যে থাকা ভিটামিন সি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। পেশীর গঠনে সাহায্য করে । এছাড়া পেঁয়াজের মধ্যে থাকা ভিটামিন বি, বি নাইন, বি সিক্স মেটাবলিজম বাড়ায়। পাশাপাশি শরীরে লোহিত রক্ত কণিকার পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। সব মিলিয়ে কাঁচা পেঁয়াজ নিয়মিত খেলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকখানি বাড়ে। সুতরাং যারা পেঁয়াজ খাবে না, তাদের সাধারণ সব রোগে ভোগার সম্ভাবনা বেশী ।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
গবেষণায় দেখা গিয়েছে প্রতিদিন ১৬২ মিলিগ্রাম পেঁয়াজ খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। কাঁচা পেঁয়াজে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম রয়েছে। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। সুতরাং যারা পেঁয়াজ খাবে না, তাদের রক্তচাপ বেশী হওয়ার সম্ভাবনা ।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে
দেহে ইনসুলিনের মাত্রা বাড়াতে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক রাখতে পেঁয়াজ অত্যন্ত ভালো। তাই যাদের ডায়াবেটিস আছে, তারা পেঁয়াজ খান, আর যারা পেঁয়াজ খান না তারা ডায়াবেটিস হওয়ার জন্য অপেক্ষা করেন।
রক্তাল্পতা দূর করে
পেঁয়াজে প্রচুর আয়রণ রয়েছে, এটি শরীরে রক্ত স্বল্পতা দূর করে, ফলে দেহ শক্তিশালী হয়। আর একারণেই নিরামিষভোজীদের শরীর সাধারণভাবে দুর্বল।
হজমশক্তি বাড়ায়
পেঁয়াজের মধ্যে থাকা ফাইবার এবং প্রিবায়োটিক্স হজম শক্তি বাড়ায়। এছাড়াও পেঁয়াজ, খাবার হজমের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন এনজাইম বাড়াতে সাহায্য করে। ফলে খাবার দ্রুত হজম হয়।
শরীরকে বিষ মুক্ত রাখে
কাঁচা পেয়াজে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে । এটি শরীরকে টক্সিন বা বিষমুক্ত রাখতে সাহায্য করে। ফলে শরীর তরতাজা থাকে । আর একারণেই নিরামিষভোজীদের শরীরে কোনো জোস থাকে না ।
চুল পড়া কমায়
চুল পড়া কমানো ও চুল বৃদ্ধিতে পেঁয়াজ খুব উপকারি। পেঁয়াজের মধ্যে প্রচুর সালফার রয়েছে, যা চুল পড়া রোধ করে। বিশেষ করে চুলের ভেঙে যাওয়া রোধ করে এবং প্রাকৃতিকভাবে চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
সংক্রমণ সারায়
পেঁয়াজের মধ্যে কার্মিনেটিভ, অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল, অ্যান্টিসেপ্টিক এবং অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় পদার্থ রয়েছে। তাই শরীরে কোথাও সংক্রমণ হয়ে থাকলে কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়ার অভ্যাস এই সংক্রমনকে দ্রুত সারিয়ে তুলে।
দাঁতের সংক্রমণ রোধ করে
দাঁতের সংক্রমণ রোধ করতেও পেঁয়াজ উপকারি। পেঁয়াজ চিবিয়ে খেলে দাঁতের ফাঁকে লুকিয়ে থাকা জীবাণুগুলো মরে যায়, ফলে সংক্রমণ প্রতিরোধ হয়।
হাড় ভালো রাখে
হাড়ের কঠিন অসুখ অ্যাথেরসক্লেরোসিস এবং অস্টিওপোরোসিসের মতো রোগের সঙ্গে লড়াই করতে পেঁয়াজ অত্যন্ত উপকারী ভূমিকা রাখে। একারণেই নিরামিষভোজীরা এই সব রোগে বেশী ভুগে ।
কোষ্ঠ্যকাঠিন্য দূর করে
পেঁয়াজে থাকা ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে ।
সর্দি কাশি জ্বর সারায়
পেঁয়াজের রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে সর্দি, কাশির সমস্যা থাকে না। ঠান্ডা লাগার ফলে গলা ব্যথা, সর্দি-কাশি, জ্বর, অ্যালার্জি বা সামান্য গা ব্যথায় দারুণ কাজ করে পেঁয়াজ ।
রুপচর্চায় পেঁয়াজ
পেঁয়াজের সঠিক এক্সটার্নাল ব্যবহার ব্রণের সমস্যা দূর করে, বয়সকে ধরে রাখে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।
এছাড়াও পেঁয়াজের মধ্যে পুষ্টিগুণের সঙ্গে যে ফাইটোকেমিক্যাল রয়েছে তা মানবদেহের জন্য খুবই উপকারি । মহিলাদের পলিসিস্টিক ওভারির সমস্যায় প্রাকৃতিক ওষুধের কাজ করে পেঁয়াজ ।
পেঁয়াজের অপকারিতা
বাস্তবে পেঁয়াজ খাওয়ায় কোনো শারীরিক অপকারিতা নেই । শুধু পেঁয়াজ কাটতে চোখ জ্বলে, কারো কারো পেঁয়াজ খেলে এলার্জি হতে পারে, সেটা তাদের সমস্যা। আর পেঁয়াজ খেলে প্রায় সবারই মুখে দুর্গন্ধ হয়। তো যে পেঁয়াজ আপনার এত উপকার করে, তার জ্বালা যন্ত্রণা একটু সহ্য করবেন না ? তাহলে- যে গরু দুধ দেয়, তার লাথি খেতে হয়, এই প্রবাদের উৎপত্তি হয়েছে কেনো ?