Table Of Content (toc)
কলিযুগ শেষ হলে কী হবে ?
কু(caps)রুক্ষেত্র যুদ্ধের পর মহারাজ পরীক্ষিতের রাজত্ব কালের মধ্যে কলিযুগ শুরু হয়েছে । বর্তমানে পাঁচ হাজার বছর গত হয়েছে । সুতরাং কলিযুগের আরও ৪ লক্ষ ২৭ হাজার বছর বাকি রয়েছে । (১৪পৃ:)
কলিযুগের পর সত্যযুগের সূচনা হবে (পৃ:২৫) । কলিযুগের শেষ সময়ে ভারতে সম্ভলগ্রাম নামক স্থানে শ্রীবিষ্ণুযশা নামে এক সৎ ব্রাহ্মণের পুত্ররূপে ভগবান শ্রীবিষ্ণু কল্কি নামে আবির্ভূত হয়ে কলি-কলুষিত অনাচারী জঘন্য প্রকৃতির সভ্যতাকে বিনাশ করবেন । তখন সমগ্র জগৎ ধ্বংস হয়ে যাবে ।
শ্রীমদ্ভাগবতে বলা হয়েছে-
"অথাসৌ যুগসন্ধ্যায়াং দস্যুপ্রায়েষু রাজসু।
জনিতা বিষ্ণুযশসো নাম্না কল্কির্জগৎপতি:।" (ভু:১/৩/২৫)
অর্থাৎ, দ্বাবিংশ অবতারে যুগসন্ধিকালে শাসক সম্প্রদায় যখন দস্যুতে পরিণত হবে, তখন ভগবান কল্কি অবতার নামে বিষ্ণুযশ নামক ব্রাহ্মণের পুত্ররূপে অবতরণ করবেন । শ্বেতঅশ্ব পৃষ্ঠে আরূঢ় হয়ে অস্ত্র দ্বারা কলিকে সম্পূর্ণরূপে কর্তন করবেন সেই কল্কি অবতার। তারপর নতুন যুগের (সত্যযুগ) সূচনা হবে । (পৃ:৬৮১)তবে সবাই মৃত্যুবরণ করবে না । বলা হয়েছে-
"দস্যূন্ কোটিশো নিহনিষ্যতি।”
অসংখ্য কোটি দস্যু নিহত হবে । তারা নিহত হলে অবশিষ্ট নাগরিকেরা ভগবান কল্কির দিব্য অঙ্গ থেকে বাতাসে প্রবাহিত সুগন্ধ অনুভব করবে । তৎক্ষণাৎ তারা দিব্য পবিত্র হয়ে উঠবে । তারাই পৃথিবীতে বিপুলভাবে প্রজা সৃষ্টি করবে । তখন মানব সমাজে সত্বগুণ বিশিষ্ট সন্তানদের জন্ম হবে এবং সত্যযুগ শুরু হবে । (পৃ: ৬৭০)
মহাপ্রলয়ঃ
সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর ও কলি এই চারিযুগ এক হাজার বার আবর্তিত হলে মোট সময়টাকে এক কল্প বলে । তখন ব্রহ্মার একদিন হয় । অর্থাৎ ১২ ঘন্টা । তেমনই ব্রহ্মার এক রাত্রির পরিধিও এরই সমান । এই রকম দিন ও রাত্রি সমন্বিত বর্ষ অনুসারে ব্রহ্মা একশত বছর বেঁচে থেকে তারপর দেহ ত্যাগ করবেন ।(পৃ:৩৩)
ব্রহ্মার মৃত্যু মানে কল্পের অবসান । অর্থাৎ মহাপ্রলয় । এই বিষয়ে শ্রীমদ্ভগবতে বলা হয়েছে-
সর্বভূতানি কৌন্তেয় প্রকৃতিং যান্তি মামিকাম্।
কল্পক্ষয়ে পুস্তানি কল্পাদৌ বিসৃজাম্যহম্। (অধ্যায় ৯, শ্লোক ৭)
অর্থাৎ, হে কৌন্তেয় ! কল্পান্তে সমস্ত জড় সৃষ্টি আমারই প্রকৃতিতে প্রবেশ করে এবং পুনরায় কল্পারম্ভে প্রকৃতির দ্বারা আমি তাদের সৃষ্টি করি । তিনি নিজেকে এই মায়াশক্তিতে বিস্তার করেন এবং তার ফলে সমস্ত জড়-জগত পুনরায় প্রকট হয় । অর্থাৎ কলিযুগের শেষ হলে সত্যযুগ আসবে অথবা মহাপ্রলয় হবে ।