১. বর্ণ ও লিখন পদ্ধতির আবিষ্কার
-কারণ, পৃথিবীর আদিগ্রন্থ হলো ঋগ্বেদ, আর এই ঋগ্বেদ সনাতন ধর্মের ঋষিদের দ্বারা রচিত, আর লিখতে তো বর্ণ লেগেছে, তাই না ?
-কারণ, জ্যোতিষ শাস্ত্রে- দণ্ড, পল, ঘণ্টা, বার, সপ্তাহ, পক্ষ, মাস, বছরের হিসেব রয়েছে সেই বেদের যুগ থেকে, যার আবিষ্কারক সনাতন ধর্মের মুনি ঋষিরা।
৩. মহাকাশে অবস্থিত গ্রহ নক্ষত্রের আবিষ্কার
- মুনি ঋষিরা জ্যোতিষশাস্ত্রকে ব্যাখ্যা করার জন্য মহাকাশে পৃথিবীর আশেপাশে অবস্থিত নয়টি গ্রহ এবং ২৭টি নক্ষত্র সম্পর্কে বলে গেছেন, যে বিষয়ে তাদের পূর্বে কারো কোনো ধারণা ই ছিলো না, পরবর্তীতে বিজ্ঞানীরা সেই সব গ্রহ নক্ষত্রের অস্তিত্বের প্রমাণ পেয়েছে।
৪. সাত বারের নামের আবিষ্কার
- মুনি ঋষিরা জ্যোতিষ শাস্ত্রকে ব্যাখ্যা করার জন্য সাতটি গ্রহের নাম অনুসারে সাত বারের সাতটি নাম রেখেছিলেন- যা রবি, সোম, মঙ্গল, বুধ, বৃহস্পতি, শুক্র এবং শনিবার নামে পরিচিত, যে নামগুলোই বর্তমানে পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় বিভিন্ন নামে ব্যবহার হচ্ছে।
৫. বছরকে ১২ মাস এবং ৩৬৫ দিনে ভাগ
- মুনি ঋষিগণ বছরকে ১২ মাসে এবং ৩৬৫ দিনে এবং মাসকে সাধারণত ৩০ দিনে বিভক্ত করেছিলেন, যার উপর ভিত্তি করে জ্যোতিষ শাস্ত্রের হিসেব নিকেশ গড়ে উঠেছে এবং যার বহু ব্যবহার রামায়ণ মহাভারতে রয়েছে।
৬. জ্যামিতির আবিষ্কার
-ইউরোপীয় প্রচারণার ফলে অনেকেই এটা জানেন যে জ্যামিতির আবিষ্কারক গ্রীসের ইউক্লিড। কিন্তু ইউক্লিডের জন্মের অন্তত ৮/১০ হাজার বছর আগেই জ্যামিতির জ্ঞান ব্যবহার করে সিন্ধু ও আর্যসভ্যতার মুনি ঋষিগণ যজ্ঞের জন্য চতুর্ভূজ যজ্ঞক্ষেত্রের নির্মান করতেন, শুধু তাই নয় সেই সময় তারা হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারোর মতো সভ্যতারও সৃষ্টি করেছিলেন, জ্যামিতিরজ্ঞান ছাড়া এটা কিভাবে সম্ভব অমন দালান কোঠা এবং পরিকল্পিত নগর গড়া ? শুধু তাই নয় ভারতে যে প্রাচীন জ্যামিতির ব্যবহার হতো, তার কোনো সীমাবদ্ধতা ছিলো না, কিন্তু ইউক্লিডের জ্যামিতির বহু সীমাবদ্ধতা আছে; যেমন- ইউক্লিডের জ্যামিতির দ্বারা ত্রিভূজ, চতুর্ভূজ বা বৃত্তাকার নয় এমন অসমান বা এবড়োথেবড়ো ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল পরিমাপ করা এবং উপবৃত্ত আঁকা সম্ভব নয়, কিন্তু ভারতীয় জ্যামিতিতে সুতার দ্বারা যে ক্ষেত্রেফল নির্ণয়ের পদ্ধতি ছিলো, তার দ্বারা সকল ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফলই শুধু নির্ণয় করাই সম্ভব নয়, উপবৃত্তও আঁকা সম্ভব। এই সব বিবেচনায় নিশ্চিতভাবে বলা যায় ভারতীয় জ্যামিতি শুধু প্রাচীনই নয়, সম্পূর্ণও বটে ইউক্লিডীয় জ্যামিতির তুলনায়।
৭. শূন্যের আবিষ্কার
সনাতনী হিন্দু আর্যভট্টই প্রথম শূন্য বা জিরোর আবিষ্কার করেন, যা সমগ্র পৃথিবীতে গাণিতিক হিসেব নিকেশে একটা বিপ্লব আনে।
৮. চিকিৎসা পদ্ধতি
আমরা সবাই জানি যে- গাছ গাছড়া থেকে আহৃত ভেষজই পৃথিবীর প্রাচীন চিকিতসা পদ্ধতি, এটা সনাতনী মুনি ঋষিদের আবিষ্কার এবং এটা বেদ থেকে উদ্ভূত বলেই এর নাম আয়ুর্বেদ।
৯. চাকা আবিষ্কার
অনেকেই মনে করে যে চীনারা চাকা আবিষ্কার করেছে। কিন্তু চৈনিক সভ্যতা সৃষ্টির বহু আগে থেকেই ভারতে চাকার ব্যবহার ছিলো কুমারদের মাটির জিনিসপত্র তৈরিতে এবং ঘোড়ার গাড়ি নির্মাণে। এখানে উল্লেখ্য যে চাকা সম্বলিত ঘোড়ার গাড়ি যা হিন্দুপুরাণে রথ নামে পরিচিত, সেটাই পৃথিবীর প্রথম দ্রুতগামী গাড়ীর কনসেপ্ট, চাকার ধারণা ছাড়া সেটা কিভাবে সম্ভব ছিলো ? তাহলে চাকার আবিষ্কারক কারা, ভারতীয় সনাতনীরা, না চীনারা ?
১০. বই পড় জ্ঞানী হওয়ার ধারণার আবিষ্কার
সর্বদায় বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত একটি থিয়োরি হলো- বই পড়লেই জ্ঞানী হওয়া যাবে, এই কনসেপ্টটির আবিষ্কারকও সনাতন ধর্মের মুনি ঋষিরা, যে কারণে তাদের প্রাপ্ত সকল জ্ঞান তারা বইপুস্তকে লিপিবদ্ধ করে গেছেন এবং শিষ্যদেরকে তা শিক্ষা দিয়ে গেছেন এবং এই জ্ঞান যাতে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে প্রবাহিত থাকে সেই শিক্ষা দিতে একজন জ্ঞানের দেবীর কনসেপ্ট সরস্বতীর তত্ত্ব দিয়ে গেছেন এবং সেই সরস্বতীর হাতে জ্ঞানের প্রতীক বই রেখেছেন এটা বোঝানোর জন্য যে বই পড়লেই জ্ঞান পাওয়া যাবে।
১১. পরিশ্রম করে ধনী হওয়ার কনসেপ্ট আবিষ্কার
পরিশ্রম করলেই যে ধনী হওয়া যায়, সেই ধারণাটাও সনাতনী মুনি ঋষিগণের আবিষ্কার, যে শিক্ষা দেবার জন্য তারা ধনসম্পদের দেবী হিসেবে দেবী লক্ষ্মীর তত্ত্ব দিয়ে গেছেন এবং লক্ষ্মীর সাথে ধান রেখে এটা বুঝিয়েছেন যে পরিশ্রম করলেই ধনী হওয়া যাবে, যেহেতু ধান উৎপাদনই পৃথিবীতে সর্বাধিক কষ্ট এবং পরিশ্রমের কাজ।
১২. দশ দিকের নাম আবিষ্কার
পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর, দক্ষিণ শুধু এই চারদিকই নয়; ঈশান, অগ্নি, নৈঋত, বায়ু, ঊর্ধ্ব এবং অধঃ সহ যে দশদিকের কথা আমরা জানি- সেসবের নামদাতা আমাদের বেদ রচয়িতা ঋষিগণ। কারণ, তারা জ্যোতিষ শাস্ত্রের অংশ বাস্তুশাস্ত্রকে ব্যাখ্যা করার জন্য এই ১০ দিকের নাম প্রথম ব্যবহার করেছেন, যে নামগুলো বর্তমানে সারা পৃথিবীর লোকজন বিভিন্ন ভাষায় বিভিন্ন নামে ব্যবহার করছে।
এছাড়াও- নাচ, গান, ছবি আঁকা, মূর্তি নির্মাণ, কাব্য রচনাসহ সমস্ত প্রকারের শিল্পকলার উদ্ভব সনাতন ধর্ম থেকে, যা সমগ্র পৃথিবীর মানুষ চর্চা করে বা করতে বাধ্য হয়। , একজন সনাতনী বা হিন্দু হিসেবে মানব সভ্যতার সবকিছু যে সনাতনীদের আবিষ্কার বা অবদান, এটা নিয়ে আপনি গর্ব করতেই পারেন।