জগদ্বন্ধু কি ঈশ্বরের অবতার ছিলেন ?
ইনি ১৮৭১ সালের ২৮ এপ্রিল, বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার ডাহাপাড়া গ্রামে তার পিতার কর্মস্থলে জন্ম গ্রহন করেন; জন্মগ্রহণ করেন বলাটা বোধহয় ঠিক হলো না; কারণ, ইনি তো ঈশ্বর, সেটাও আবার যা তা ঈশ্বর নয়, ষড়ভূজী ঈশ্বর, তাই বলা উচিত ছিলো আবির্ভূত হন।
যা হোক, ইনার আসল নাম কী, সেটা তার ভক্ত শিষ্যরা সম্ভবত এখনও প্রকাশ করে নি, তাই তার আসল নাম খুঁজে পেলাম না, জগদ্বন্ধু উনার উপাধি, তাঁর ভক্ত ও শিষ্যরা উনাকে আরো নানা উপাধি দিয়েছে, এই প্রবন্ধের মাধ্যমে আস্তে আস্তে সেগুলো আমরা জানবো।
জগদ্বন্ধুর পিতার নাম দীননাথ ন্যায়রত্ম এবং মাতার নাম: বামাসুন্দরী দেবী। দীননাথের পৈতৃক বাড়ি ছিল বর্তমান বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলার গোবিন্দপুর গ্রামে, জগদ্বন্ধুর জন্মের পর দীননাথ তার পিতার বাড়িতে ফিরে আসে, এখানেই জগদ্বন্ধু বড় হয় এবং তার নানা লীলা প্রদর্শন করেন, যার মধ্যে একটি হলো ষড়ভূজ মূর্তিতে দুঃখীরাম ঘোষকে দর্শন দান। খেয়াল করুন ভগবান বিষ্ণু যখন কাউকে দর্শন দেন, সেখানে তিনি চারহাত প্রদর্শন করেন, কিন্তু জগদ্বন্ধু প্রদর্শন করে ছয় হাত, ইনি সম্ভবত ভগবান বিষ্ণুর বাপ অথবা বাপের বাপ।
যখন কেউ কাউকে অযথা উপরে তোলে বা কাউকে অযথা মহান করে দেখানোর চেষ্টা করে, তখন ঠিক কেউ তাকে টেনে নামায় তার আসল জায়গায় বা তার ভক্ত শিষ্যদেরকে দেখিয়ে দেয় তাদের গুরু বা প্রভুর প্রকৃত স্থান আসলে কোনটা্। তাই শুধু জগদ্বন্ধুকেই নয়, যাদেরকেই অযথা উপরে তোলা হয়েছে, তাদের সবাইকেই আমি টেনে নিচে নামিয়ে তাদের প্রাপ্য প্রকৃত স্থানে তাদেরকে বসানোর চেষ্টা করছি সনাতনধর্ম ও সমাজের স্বার্থে, এই কাজ আমি করছি বলে উপর রাগ করে কোনো লাভ নেই; কারণ, এই কাজ আমি না করলে আরেকজন করতো; কেননা, এটাই প্রকৃতির নিয়ম; যেখানে অনাচার, সেখানে আচার শেখাতে কেউ না কেউ তো আসবেই।
জগদ্বন্ধু একজন বৈষ্ণব ধর্মগুরু, আর আমরা জানি যে বৈষ্ণব মতবাদের প্রবর্তক হলো চৈতন্যদেব, যাকে ভালোবেসে বৈষ্ণবরা বলে মহাপ্রভু, কিন্তু জগদ্বন্ধুর প্রতি তার শিষ্য-ভক্তদের ভালোবাসা মনে হয় আরো প্রবল; তাই, জগদ্বন্ধুকে তারা বলে "মহা মহাপ্রভু"; চৈতন্যদেবকে মহাপ্রভু বলা পাপ; কারণ, তাহলে চৈতন্যদেবকে শ্রীকৃষ্ণের স্থলে বসিয়ে শ্রীকৃষ্ণকে অপমান করা হয়; যেহেতু এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে এমন কেউ নেই বা এমন কিছু নেই, যা শ্রীকৃষ্ণের সমতুল্য হতে পারে। তাই জগদ্বন্ধু যদি "মহা মহাপ্রভু" হয়, তাহলে তিনি আধ্যাত্মিকতার বিচারে শ্রীকৃষ্ণের চেয়েও বড়, যা বাস্তবে অসম্ভব, এমনটা ভাবা পাপ এবং তা প্রচার করাও মহাপাপ।
চৈতন্যদেবকে তার ভক্ত শিষ্যরা গৌরাঙ্গ বলেও ডাকে, এই হিসেবে জগদ্বন্ধুকে তার ভক্ত শিষ্যরা বলে নবগৌরাঙ্গ। জগদ্বন্ধুর নবগৌরাঙ্গ নাম খারাপ নয়; কারণ, এই জগদ্বন্ধু চৈতন্যদেবের নপুংষক মতবাদ, বৈষ্ণব মতবাদ, যার মূল নীতি হলো নিরামিষ খেয়ে খেয়ে কাম ক্রোধকে ত্যাগ করে, বিয়ে শাদী ক'রে বা না ক'রে, হিন্দু জনসংখ্যাকে কমিয়ে, মুসলমানদের হাতে মার খেয়ে জন্মভূমি থেকে নির্বাসিত হওয়া এবং অকারণে ভ্যা ভ্যা করে কান্নাকাটি করা; সেই বৈষ্ণব মতবাদকে জগদ্বন্ধু তার মতো করে অনেকটাই এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন এবং তা প্রসারিত করেছেন; সুতরাং জগদ্বন্ধুর নবগৌরাঙ্গ নাম মোটেই খারাপ কিছু নয়, বরং সার্থক।
জগদ্বন্ধু ছিলেন সমাজ সংস্কারক এবং তিনি নিম্নবর্ণের হিন্দুদের জন্য কিছু কাজ করেছিলেন এবং তাদেরকে বৈষ্ণবধর্মে দীক্ষা দিয়ে তাদের নামে শেষে মোহন্ত লাগিয়ে দিয়েছিলেন, সমাজের নীচু স্তরের লোকের কথা ভাবার জন্য জগদ্বন্ধু অবশ্যই প্রশংসার পাবার এবং সম্মান লাভের যোগ্য; কিন্তু এর জন্য তিনি তো পূজা পেতে পারেন না বা ভগবান হতে পারেন না বা ঈশ্বর সমতুল্য হতে পারেন না, যার জন্য তার নামের শেষে লাগাতে হবে জগদ্বন্ধু হরি ?
জগদ্বন্ধু- হরিকথা, চন্দ্রপাত ও ত্রিকাল নামে তিনটি বই লিখেছেন; জগদ্বন্ধুর ভক্ত শিষ্যরা এই তিনটি বইকেই শাস্ত্রগ্রন্থ মনে করে এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তারা এই তিনটি বই থেকেই পাঠ করে, এটা করে তারা কি সনাতন ধর্মের মধ্যে আছে, না বাইরে চলে গেছে ? কার্যকারিতার দিক থেকে সনাতন ধর্মের প্রধান ধর্মগ্রন্থ গীতা, যা পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণের মুখের বাণী, জগদ্বন্ধুর ভক্ত শিষ্যদের মধ্যে গীতার স্থান কোথায় ?
জগদ্বন্ধুর এক শিষ্যের নাম ড. মহানামব্রত ব্রহ্মচারী, মূলত ইনিই জগদ্বন্ধুর মতকে প্রচার ও প্রসার করেন, আর এনার নাম অনুযায়ীই জগদ্বন্ধুর ভক্ত শিষ্যরা মহানাম সম্প্রদায় নামে বর্তমানে পরিচিত। এই মহানাম সম্প্রদায়- শ্রীকৃষ্ণের ১০৮ নামের অনুকরণে জগদ্বন্ধুর ১০৮ নাম রেখেছে এবং তা প্রচার করছে, এটা কি জগদ্বন্ধুকে শ্রীকৃষ্ণের সমতুল্য করা বা পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণকে অপমান করা নয় ?
বোদ্ধা বৈষ্ণবরা, চৈতন্যদেবকে অবতারের অবতারী বলে অর্থাৎ চৈতন্যদেবকে তারা শ্রীকৃষ্ণের অবতার মনে করে, কিন্তু তারা এটা খেয়াল করে না যে পৃথিবীতে শ্রীকৃষ্ণের অবতার বলে কিছু নেই, সকল অবতার ই বিষ্ণুর; বৈষ্ণবদের এই মূর্খামিকে আশ্রয় করে মহানাম সম্প্রদায়ীরা জগদ্বন্ধুকে মহাবতারী বলে, ফলে শাস্ত্রজ্ঞানে বৈষ্ণবরা যদি মূ্র্খ হয়, মহানাম সম্প্রদায়ীরা আরো বড় মূর্খ অর্থাৎ মহামূর্খ।
এবার জগদ্বন্ধুর কিছু বাণী নিয়ে আলোচনা করা যাক-
জগদ্বন্ধু বলেছেন,
"আমি পৃথিবীর কেন্দ্র। আমি সেই পদ্মপলাশলোচন হরি। আমিই একমাত্র পুরুষ আর সবই প্রকৃতি।"
- আপনি যদি পৃথিবীর কেন্দ্র হতেন, তাহলে আপনার জীবদ্দশাতেই শ্রীকৃষ্ণের মতো আপনার নাম ডাক চারিদিকে ছড়িয়ে পড়তো, আপনার মৃত্যুর (১৯২১) ১০০ বছর হতে চললেও, যার ১%ও হয় নি। আর আপনি যদি পদ্মপলাশলোচন হরি হতেন, তাহলে এমন ক্ষীণ ও শীর্ণকায় দেহের অধিকারী না হয়ে কমপক্ষে তেজ বীর্যে ভরা বীর পালোয়ান হতেন; আপনার ছবি দেখে তো মনে হয় না যে আপনাদের দেহে কোনো বল বা শক্তি আছে, মনে হয় একটি ধাক্কা দিলেই আপনি মাটিতে পড়ে দম আটকে মারা যাবেন, আপনি নিজেকে হরি বলেন বা ভাবেন কিভাবে ? হরি মানে ভগবান নয়, ঈশ্বর। আর ঈশ্বরের মধ্যে সকল গুন থাকে। ঈশ্বরের তুলনায় ভগবান অনেক ছোট ব্যাপার, সেই ভগবানদের মধ্যেও মিনিমাম ছয়টি গুন থাকে, সেই গুনের একটি হলো বীর্য, তথা দৈহিক শক্তি; এই দৈহিক শক্তি আছে আপনার মধ্যে ? নেই। তাহলে আপনি তো ভগবানই নন, আপনি নিজেকে হরি বা ঈশ্বর ভাবেন আর তা বলেন কিভাবে ?
এছাড়াও আপনি বলেছেন, আমিই একমাত্র পুরুষ আর সবই প্রকৃতি।
পুরুষ কাকে বলে জানেন ? পুরুষ তিনিই, যিনি সৃষ্টি করতে পারেন। আপনি কিছু সৃষ্টি করেছেন ? সৃষ্টি করার জন্য প্রকৃতি নামক নারীকে গ্রহন করেছেন ? একজন নারীকে সন্তুষ্ট করার এবং সন্তান জন্ম দানের যে শক্তি, সেটিই তো আপনার ছিলো না, তাই বিয়ে শাদী না করে সন্ন্যাসী হওয়ার ভান করেছেন। কত বছর বয়সে কেউ সন্ন্যাস নিতে পারে, সেটা আপনি জানেন ? দুই তলায় না উঠে কেউ কি চার তলায় উঠতে পারে ? গার্হস্থ্য আশ্রম, যেটা চার আশ্রমের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ, যার উপর পুরো সমাজ সংসার টিকে থাকে, সেই গার্হস্থ্য আশ্রম পালন না করে আপনি কিভাবে এক লাফে সন্ন্যাসে যেতে পারেন ? যুবক বয়সে কারা সন্ন্যাসীর ভাব ধরে, জানেন ? যারা নপুংসক এবং অকর্মন্য, যাদের কাজ করে পেট চালানোর এবং সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা নেই, তারাই সন্ন্যাসীর ভান করে।
আপনার চেয়ে মানুষ হিসেবে বহুগুনে শ্রেষ্ঠ মতুয়াদের হরিচাঁদ; কারণ, তিনি সংসারে থেকেই মানুষের জন্য কাজ করেছেন এবং তার আদর্শে সমাজ যাতে বিলুপ্ত না হয় সেজন্য নিজে বিয়ে করেছেন, সন্তানের জন্ম দিয়েছেন এবং তার অনুসারীদেরকে গার্হস্থ্য ধর্ম পালন করতে নির্দেশ দিয়েছেন। আপনাকে অনুসরণ করে সমাজ কী পাবে ? আপনাকে অনুসরণ করলে হিন্দু সমাজ তো বিলুপ্ত হয়ে যাবে, যেমন বিলুপ্ত হবে চৈতন্যদেবকে অনুসরণ করলে। নিজের এই গুন নয়, দোষ নিয়ে বলেন, আমিই একমাত্র পুরুষ, আর সবাই প্রকৃতি ? গীতার ১৪/৩,৪ নং শ্লোকে শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন- প্রকৃতিতে আমিই বীজ প্রদানকারী পিতা। "আমিই একমাত্র পুরুষ আর সবই প্রকৃতি" বলে নিজেকে পরমব্রহ্ম বা পরমেশ্বর ব'লে শ্রীকৃষ্ণ মনে করছেন। আপনি যদি বেঁচে থাকতেন, আপনার নিজের এই ঈশ্বরত্বের দাবী আপনার পাছা দিয়ে ঢুকিয়ে আপনার মুখ দিয়ে বের করতাম, আর আপনাকেই বুঝিয়ে দিতাম যে আসলে আপনে কী ?
জগদ্বন্ধু আরো বলেছেন,
"আল্লাহ্ বল আর ভগবান বল সে সৃষ্টি করেছে মানুষ, আর মানুষ সৃষ্টি করেছে জাত, পৃথিবীতে একটি মাত্র জাতি/ধর্ম আছে, সেটি হল মানব জাতি/মানবধর্ম।"
- আল্লাহ আর ভগবান কি এক ? ইসলামের আল্লা সম্পর্কে এই নকল ঈশ্বরের কি কোনো জ্ঞান ছিলো ? ইসলামের আল্লা তার কোরানে সকল অমুসলিমকে ইসলাম গ্রহন না করার অপরাধে হত্যা করার নির্দেশ দিয়েছে। কোনো ভগবান কি সেই নির্দেশ দিয়েছে ? দেয় নি। তাহলে আল্লা ও ভগবান এক হয় কী করে ? আর ভগবান কি মানুষ সৃষ্টি করেছে ? এই বলদা তো দেখছি ঈশ্বর আর ভগবানের মধ্যে পার্থক্যই জানতো না। পরমব্রহ্ম বা ঈশ্বর সৃষ্টি করেছেন মানুষ, আর অবতার বা দেবগণ হলেন ভগবান, অবতারদের লীলার মাধ্যমে ঈশ্বর লোকশিক্ষা দিয়ে থাকেন এবং দেবগণ হলেন জগৎ পালনার্থে ঈশ্বরের সহায়ক শক্তি। সুতরাং কোনো ভগবানের ক্ষমতা নেই কাউকে সৃষ্টি করার, সৃষ্টি করে থাকেন ঈশ্বর, আর এই জগা বলছে- ভগবান সৃষ্টি করেছে মানুষ ?
এরপর জগা বলেছে- মানুষ সৃষ্টি করেছে জাত। তাহলে শ্রীকৃষ্ণ গীতায় কেনো বলছেন যে-
"চাতুর্বণ্যং ময়া সৃষ্টং গুণকর্ম বিভাগশঃ"
অর্থাৎ গুন ও কর্ম অনুসারে আমিই চারটি বর্ণ সৃষ্টি করেছি ?
তাহলে তুই গলায় তুলসীর মালা দিয়ে আছিস কেনো ? আর মুসলমানরা মাথায় টুপি ও মুখে দাড়ি ধারণ করে আছে কেনো ?
নাস্তিক্যবাদী এবং ভাববাদীরা বলে- পৃথিবীতে জাতি মাত্র দুটো- নারী ও পুরুষ। সেকথা বললেও তো এটাকে মানবতাবাদ বলে ধরে নেওয়া যেতো। তা না বলে কী বলা হলো- পৃথিবীতে একটি মাত্র জাতি/ধর্ম আছে, সেটি হল মানব জাতি/মানবধর্ম। এই যদি তার বিশ্বাস, তাহলে সে সকল মত পথের ঊর্ধ্বে উঠে মানবধর্ম প্রচার করে না করে বৈষ্ণব মতবাদ প্রচার করতে কেনো গেলো, আর কেনোই বা নীচু জাতের হিন্দুদেরকে বৈষ্ণবত্বে দীক্ষা দিয়ে তাদের নামের শেষে মোহন্ত লাগালো ? এটাই কি পৃথিবীর একটি মাত্র জাতি ধর্মের লক্ষ্মণ ?
যা হোক, জগা তো নিজেকে শুধু ভগবান নয় ঈশ্বর ভাবতো, তার নির্বোধ ভক্ত শিষ্যরাই বা তা না ভাবতে যাবে কেনো, তাই মহানাম সম্প্রদায়ীরা কবিতা বা গান লিখেছে-
" সত্য যুগে ছিলেন হরি ত্রেতায় ধনুকধারী।দ্বাপরেতে প্রেমলীলা ল’য়ে রাধাপ্যারী।।কলিতে গৌরাঙ্গ লীলা পাষণ্ড উদ্ধারী।এবার জগদ্বন্ধু লীলা মহাউদ্ধারণকারী।।"
মহানামীদের মতে- গৌরাঙ্গ শুধু উদ্ধারকর্তা, যে নিজেকেই উদ্ধার বা রক্ষা করতে না পেরে পুরীর মন্দিরের পুরোহিতদের হাতে মরেছে, কিন্তু এই নবগৌরাঙ্গ মহাউদ্ধারকর্তা, তাই তারা তার নাম দিয়েছে মহাউদ্ধারণকারী। যিনি উদ্ধার করতে পারেন, তিনি রক্ষা করতেও পারেন, কিন্তু এই প্রবন্ধের শেষে আমরা দেখবো, তিনি তার ভক্ত শিষ্যদের এবং নিজের আশ্রমকে কতটা রক্ষা করতে পেরেছিলেন ?
আমি আগেই বলেছি- জগদ্বন্ধুর আদর্শকে ফরিদপুরের বাইরে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন জগদ্বন্ধুর শিষ্য ড. মহানামব্রত ব্রহ্মচারী, তার এবং তার শিষ্যদের চেষ্টায় বর্তমানে ফরিদপুরের শ্রী অঙ্গনের বাইরে- সিলেট, রংপুর, ঢাকা, মুর্শিদবাদ, এবং কোলকাতার রঘুনা্থ পুরে জগদ্বন্ধু আশ্রম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং তার নপুংসক মতবাদের প্রচার হয়ে বাঙ্গালি হিন্দু, শুধু সনাতন ধর্ম থেকে দূরে সরে যাচ্ছে না, বিভিন্ন ভাবে সনাতন ধর্মেরও সর্বনাশ হচ্ছে। যা হোক, এই ঘটনা জগদ্বন্ধুর মৃত্যুর পর, Sorry তার তিরোভাবের পর ড. মহানামব্রত ব্রহ্মচারীর সময়ের ঘটনা। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনাতা যুদ্ধে সময় পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ফরিদপুরের শ্রী অঙ্গন, যেটা জগদ্বন্ধুর নিজের হাতে প্রতিষ্ঠিত আশ্রম, তাতে হামলা করে এবং কীর্তনরত অবস্থায় ৮জন মহানামীকে হত্যা করে, সেই সময় মহানামব্রত কোনো রকমে পালিয়ে কোলকাতায় চলে যায় এবং কোলকাতার রঘুনাথ পুরে জগার আরেকটি আশ্রম প্রতিষ্ঠা করে।
এখানে প্রশ্ন হচ্ছে- যে জগা, মহা উদ্ধারণকারী, স্বয়ং হরি, বিষ্ণুর চেয়ে যার দুইটা হাত বেশি, মহানামীরা যাকে ঈশ্বর জ্ঞানে শ্রীকৃষ্ণকে অপমান করে রথে বসিয়ে টানে, সেই জগার আশ্রমে, জগার অনুসারীদের ভক্ত শিষ্যদেরকে, মুসলমানরা কিভাবে হত্যা করে এবং তার আশ্রম ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত করে ? তার আশ্রমে যখন এই হত্যালীলা চলছিলো তখন মহাউদ্ধারকারী, স্বয়ং হরি জগা কোথায় ছিলো ?
আমি জানি এই সব প্রশ্নের উত্তর দেবার ক্ষমতা কোনো মহানামীর নেই।
সবশেষে মহানামীদের উদ্দেশ্যে বলছি- জগাকে আপনারা রথে বসিয়ে টেনে, শ্রীকৃষ্ণকে যেভাবে এবং যে পরিমাণ অপমান করেছেন, তার জবাব একদিন আপনাদেরকেই দিতেই হবে। প্রস্তুত থাকুন, কেউ না কেউ এর জবাব চাইতে অবশ্যই কোনো একদিন আপনাদের সম্মুখে উপস্থিত হবে।