গণেশ কে ?
গণ+ ঈশ= গণেশ । গণ অর্থে সমষ্টি যিনি ঈশ্বর বা নায়ক । তিনিই গণেশ । “গণ” শব্দটির মধ্যে আর একটি অর্থ আছে। এর অর্থ সেনাবাহিনী । গণদের দের অগ্র দেখে তাঁর এক নাম গণনায়ক । গণেশ কে একদন্ত নামে ডাকা হয় । বলা হয় গণেশের একটি দাঁত কেটেছিলেন পরশুরাম । মহাভারত স্বহস্তে লিখেছিলেন গণেশ । কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদ ব্যাসজী বলছেন আর গণেশ লিখেছেন । গণেশ হল ‘গন শক্তি’ এর প্রতীক ।
আরো জানুনঃ গণেশ পূজা কেন করা হয় ?
মূষিক বা ইঁদুর কে শ্রী গণেশের বাহন বলা হয় । বৃহত্তম আর ক্ষুদ্রতমের এ যেন মহামিলন । তাছাড়া জীব অষ্টপাশে বদ্ধ । ঘৃনা, অপমান, লজ্জা, মান, মোহ, দম্ভ, দ্বেষ, বৈগুণ্য ইত্যাদি অষ্ট পাশ । শ্রী গণেশের বাহন এই অষ্টপাশ ছিন্ন করবার শক্তি দেয় ।
শ্রী গণেশ কে মঙ্গল মূর্তি, শ্রীসিদ্ধিবিনায়ক, বিঘ্নহর্তা নামে ডাকা হয় । সমস্ত শুভ কাজের শুরু করার আগে শ্রী গণেশের নাম নিয়ে করলে তা সফল হয়ে থাকে । পৌরাণিক দেবতাদের মধ্যে ‘প্রথম পূজ্য’ তিনি ।
এখানেঃ গণেশ পূজা পদ্ধতি pdf
ঋগ্বেদ এ“গণনাং ত্বা গণপতিং হবামহে” (২/২৩/১) মন্ত্রে গণপতির আহ্বান দেখা যায় । যজুর্বেদীয় (২৩/১৯) মন্ত্রে গণেশ কে দেব গনের মধ্যে গণপতি, প্রিয় গনের মধ্যে প্রিয়পতি এবং নিধি গনের মধ্যে নিধিপতি বলা হয়েছে ।
“গনপতয়ে স্বাহা” মন্ত্রের উল্লেখ পাওয়া যায়- কৃষ্ণ যজুর্বেদের কাণ্বসংহিতা (২৪/৪২) এবং ঐ বেদের মৈত্রায়নী সংহিতা(৩/১২/১৩) তে । মৈত্রায়নী সংহিতা (২/৯/১/৬) ও তৈত্তিরীয় আরণ্যকের (১০/১) গণপতির গায়ত্রী উল্লেখ সহকারে তাঁর বর্ণনা আছে । গণেশ পুরাণে গণেশ কেই ওঁঙ্কার রূপী ভগবান বলা হয় । পুরাণ মতে গণেশ ভগবান শিব ও মাতা পার্বতীর পুত্র – তথা কুমার কার্ত্তিকের অনুজ ।
ব্রহ্মবৈবর্ত পুরান মতে গণেশ ভগবান বিষ্ণুর কৃপায় উৎপন্ন হন- এবং ইনি ভগবান বিষ্ণুর মতো চক্র, শঙ্খ, গদা, পদ্ম ধারন করেন । বামন পুরাণ মতে, মাতা পার্বতী স্বীয় দেহ থেকে শ্রী গণেশ কে প্রকট করেন বলে বলা হয়েছে । আবার বরাহ পুরান মতে গণেশের সৃষ্টি হয়েছিল ভগবান শিবের মুখ থেকে । গণেশের মুখ কিভাবে গজানন হল – তা নিয়ে পুরাণে একাধিক কাহিনী প্রচলিত আছে ।
ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ মতে, গ্রহরাজ শনিদেব গণেশ কে দর্শন করলে গণেশের মুণ্ড পাত হয়ে যায় । পুরাণ সমূহে গ্রহদেবতা শনির দৃষ্টিকে হানিকারক বলা হয় । আবার শিব পুরাণ মতে, গণেশের মুণ্ডচ্ছেদ করেন স্বয়ং তাঁর পিতা মহাদেব । বরাহ পুরানেও শিব দ্বারা গণেশের মুণ্ডপাতের ঘটনা দেখা যায় । এতে মহাদেবী গৌরী ভীষনা রুষ্টা হলে শাপযুক্ত ঐরাবতের মস্তক কেটে গণেশের ধড়ে লাগিয়ে তাঁকে পুনর্জীবন দিয়ে দেবতাদের মধ্যে সর্ব অগ্রে পূজ্য ঘোষনা করেন দেবাদিদেব মহাদেব ।