Table Of Content (toc)
মহালয়া কি ? এবং কেন ?
মহালয়া শব্দের অর্থ
সবাই নিশ্চিত মহালয়া মানে দূর্গাপূজার দিন গোনা, মহালয়ার ৬ দিন পর মহাসপ্তমি, তাই দেবীকে আমন্ত্রণ ইত্যাদি । মহালয়ার তার চেয়ে বড় গুরুত্ব আছে ।
ত্রেতা যুগে ভগবান শ্রীরামচন্দ্র অকালে দেবীকে আরাধনা করেছিলেন লঙ্কা জয় করে সীতাকে উদ্ধারের জন্য । আসল দূর্গা পূজা হলো বসন্তে, সেটাকে বাসন্তী পূজা বলা হয় । শ্রীরামচন্দ্র অকালে-অসময়ে পূজা করেছিলেন বলে এই শরতের পূজাকে দেবীর অকাল-বোধন বলা হয় ।
সনাতন ধর্মে কোন শুভ কাজ করতে গেলে, বিবাহ করতে গেলে প্রয়াত পূর্বদের সাথে সমগ্র জীব-জগতের জন্য তর্পণ করতে হয়, কার্যাদি-অঞ্জলি প্রদান করতে হয় । তর্পণ মানে খুশি করা । ভগবান শ্রীরাম লঙ্কা বিজয়ের আগে এদিনে এমনই করেছিলেন ।
পিতৃপক্ষ ও দেবীপক্ষ
সেই অনুসারে এই মহালয়া তিথিতে যারা পিতৃ-মাতৃহীন তারা তাদের পূর্বপূরূষের স্মরণ করে, পূর্বপূরুষের আত্নার শান্তি কামনা করে অঞ্জলি প্রদান করেন । সনাতন ধর্ম অনুসারে এই দিনে প্রয়াত আত্নাদের মর্ত্যে পাঠিয়ে দেয়া হয়, প্রয়াত আত্নার যে সমাবেশ হয় তাহাকে মহালয় বলা হয় । মহালয় থেকে মহালয়া । পিতৃপক্ষের ও শেষদিন এটি ।
সনাতন ধর্ম অনুসারে বছরে একবার পিতা-মাতার উদ্দেশ্যে পিন্ড দান করতে হয়, সেই তিথিতে করতে হয় যে তিথিতে উনারা প্রয়াত হয়েছেন । সনাতন ধর্মের কার্যাদি কোন তারিখ অনুসারে করা হয় না । তিথি অনুসারে হয় ।
মহালয়াতে যারা গঙ্গায় অঞ্জলি প্রদান করেন পূর্বদের আত্নার শান্তির জন্য, তাহারা শুধু পূর্বদের নয়, পৃথিবীর সমগ্র কিছুর জন্য প্রার্থনা ও অঞ্জলি প্রদান করেন ।
যে-বান্ধবা বান্ধবা বা যেন্যজন্মনি বান্ধবা
যেযাং, ন মাতা, ন পিতা, ন বন্ধু
অর্থাৎ যারা বন্ধু নন, অথবা আমার বন্ধু ও, যারা জন্ম জন্মাত্নরে আমার আত্নীয় বন্ধু ছিলেন, তারা সকলেই আজ আমার অঞ্জলি গ্রহন করুন ।
যাদের পুত্র নেই, যাদের কেউ নেই মহালয়ার দিন স্মরণ করার, তাদের জন্যও অঞ্জলী প্রদান করতে হয় ।
অর্থাৎ যাদের মাতা-পিতা-বন্ধু কেউ নেই আজ স্মরন করার তাদেরকে ও স্মরন করছি ও প্রার্থনা করছি তাদের আত্না তৃপ্তিলাভ করুক ।
এ দিন তর্পন করলে পিতৃপুরুষেরা আমাদের আশীর্বাদ করেন । এ ছাড়াও এদিনে দেবী দুর্গার বোধন করা হয়, বোধন অর্থ জাগরণ । তাই মহালয়ার পর দেবীপক্ষের (শুক্লপক্ষের) প্রতিপদে ঘট বসিয়ে শারদীয়া দুর্গা পুজার সূচনা করা হয় । প্রসঙ্গতঃ যে শ্রাবণ থেকে পৌষ ছয় মাস দক্ষিণায়ন, দক্ষিণায়ন দেবতাদের ঘুমের কাল । তাই বোধন অবশ্যই প্রয়োজন, আরও বলা দরকার যে মহালয়ার পর প্রতিপদে যে বোধন হয় সে সময়ও সংকল্প করে দুর্গা পূজা করা যায় । একে বলে প্রতিপদ কল্পরম্ভা, তবে সাধারণত আমরা ষষ্ঠী থেকে পূজার প্রধান কার্যক্রম শুরু হতে দেখি যাকে বলা হয় ষষ্ঠাদিকল্পরম্ভা । কিছু প্রাচীন বনেদী বাড়ি এবং কিছু মঠ মন্দিরে প্রতিপদ কল্পরম্ভা থেকে পুজো হয় । যদিও প্রতিপদ কল্পরম্ভা থেকে শুরু পুজোতেও মূল আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয় ষষ্ঠি থেকেই এবং সপ্তমী থেকে বিগ্রহতে । প্রতিপদ থেকে শুধু ঘটে পূজো ও চণ্ডী পাঠ চলে ।
অসাধারণ লিখেছেন 😍 Byomkesh.
ReplyDeleteশেয়ার করলাম দাদা ❤️
অবশ্যই 🙏
Delete