দুর্গা পূজায় বেশ্যালয়ের মাটি লাগে কেন ?
দুর্গা পূজায় প্রতিমায় ‘বেশ্যাদ্বারের মাটি’ লাগে ৷ সংস্কৃত শব্দের অর্থ না জানার ফলে বিভ্রান্তিতে পড়ছে অনেকে ৷
“অভিষিক্তা ভবেৎ বেশ্যা ন বেশ্যা
কুলটা প্রিয়ে মহানির্বান তন্ত্র ৷
“পূর্ণাভিষেকো দেবেশি দশ বিদ্যাবিধোস্মৃত”
দীক্ষা পুরশ্চরণঃ---- পূর্ণাভিষেক মন্ত্রচৈতন্য হওয়ার ফলে যিনি দেবত্বে উন্নীত হয়েছেন, এরকম অভিষিক্তাকে বেশ্যা বলা হয়েছে ৷ আর উনারা যেখানে বাস করেন সেই দ্বারের মাটিকে বলা হয়েছে ৷ বর্তমান সমাজের পতিতালয়ের মাটি বলা হয়নি ৷ এই ঘৃনিত মহা পাপকে শাস্ত্র কখনও প্রশ্রয় দেয়নি বরং প্রায়শ্চিত্ত করতে বলেছে ।
আরও জানুনঃ নমস্কার কি এবং কেন করা হয়
তাৎপর্য
প্রথমে বলি প্রতিটি ধর্ম তাদের নীজ নীজ মেয়েদের সমান অধিকার দিয়েছে !
কিন্তু হিন্দু ধর্ম শুধু সমান না, সর্ব উচ্চ সম্মান দিয়েছে, একমাত্র হিন্দুধর্মে মেয়েদের মাতৃরুপে, দেবী রুপে, সতী রুপে, শক্তি রুপে পুজা করা হয় ।
যা আপনি কখনো অন্য ধর্মে পাবেন না ।
পতিতালয় বলতে বোঝানো হয়েছে দেহ ব্যবসা যারা করবে যে স্থানে থাকবে সে স্থানকে পতিতালয় বলা হয় । কিন্তু একটা জিনিস ক্লিয়ারলি আপনি বুঝে নেবেন ওখানে যে পুরুষগুলো যাচ্ছে তারাও কি খারাপ কাজ করছে না ? যদি খারাপ কাজ তারাই করে তারা যদি স্নান করার পর মন্দিরে এসে পূজা দিতে পারে । মায়ের মান্ডবে এসে মাকে প্রণাম করতে পারে । তাহলে পতিতালয়ের মেয়েরা কেন এখানে ঘৃণিত হবে !
আর সে সমস্ত মেয়েরা যেন নির্ধিদায় মাকে সে প্রণাম বা পূজামণ্ডপে এসে পূজা উদযাপন করতে পারে আর সে আর সে জন্যই মায়ের প্রতিমা তৈরি করতে পতিতালয়ের একটু মাটি প্রয়োজন হয় ।
এখানেঃ হিন্দুরা কেন প্রতিমা বিসর্জন দেয় ?
একটা পুরুষ যখন পতিতার বাড়ি গিয়ে অবৈধ যৌনাচার করে তখন ঐ পুরুষের জীবনের সমস্ত পূণ্য পতিতার বাড়ির মাটিতে পতিত হয় বা পূণ্য তাকে ত্যাগ করে ,বিনিময়ে ঐ পুরুষ পতিতার ঘর থেকে নিয়ে আসে সমস্ত পাপ । এরূপ বহু পুরুষের অর্জিত সমস্ত পূণ্য ত্যাগে পতিতাদের ঘরের মাটি পূণ্যময় হয় বলে মনে করা হয় ,তাই পতিতার ঘরের মাটি প্রয়োজন হয় । এ থেকে শিক্ষা লাভ করা যায় যে ,পতিতার ঘরে গিয়ে অবৈধ যৌনাচার করে নিজের জীবনের সমস্ত পূণ্য বিসর্জন দিও না । নারী কখনো অপবিত্র হয় না ।
নারী মায়ের জাতি । নারীর গর্ভেই পুরুষের জন্ম । নারীকে পতিতা বানায় পুরুষরাই । তাই ঐ পুরুষরাই অপবিত্র । মায়ের প্রতিমা তৈরীতে পতিতালয়ের মাটি দিতে হয়, এর মাধ্যমে এটাই বুঝানো হয়েছে যে তাঁরা পরিস্থিতির শিকার তাঁদের সন্মান করতে হবে । নারী কোখনো অপবিত্র হতে পারে না (নিজের ইচ্ছেতে যে নারী নিজেকে বিকিয়ে দেন তিনি ছাড়া), যে সব পুরুষ ঐ নারীদের পতিতা হতে বাধ্য করেছে সেই সব পুরুষরাই অপবিত্র ।
শরৎকালে হয় দেবীর অকাল বোধন ৷ এই সময় মহামায়া ৯টি রূপে পূজিত হন ৷ এই নবম রূপটিই আসলে পতিতালয়ের প্রতিনিধি ৷ মনে করা হয়, সে কারণেও এই রীতির জন্ম হয়েছে ৷
জয় সনাতন
ReplyDelete