মহেন্দ্র পর্বত
ওড়িশা রাজ্যের অন্তর্গত গঞ্জাম জেলায় পূর্বঘাট পর্বতমালা বিস্তৃত রয়েছে । এর সবচেয়ে উচু শিখরটি মহেন্দ্র নামে বিখ্যাত । এই পর্বতে চারটি বিশাল মন্দির আছে । চোলরাজ রাজেন্দ্র ১১শ শতাব্দীতে ওখানে একটি জয়ন্ত স্থাপন করেছিলেন । স্থানীয় লােকেরা শ্রদ্ধার সঙ্গে বিশ্বাস করেন—সপ্ত চিরজীবিদের অন্যতম পরশুরাম এই পর্বতে বিচরণ করেন ।
মলয়
মলয় শব্দটি এবং মলয় পর্বত প্রাচীন কাল থেকে ভারতের বিভিন্ন ভাষাভাষী ঋষিমুনি ও কবি-সাহিত্যিকের বর্ণনায় মুখর । চন্দন বৃক্ষের জন্য সমধিক প্রসিদ্ধ এই পর্বত কর্ণাটক রাজ্যের দক্ষিণ মহীশূরে অবস্থিত । এর একটি শিখরের নাম নীলগিরি এবং এই পর্বতের প্রচলিত নামও নীলগিরি । চৈতন্য চরিতামৃতে, হর্ষচরিতে, ভাগবত এবং পুরাণে এই পর্বতের কথা বলা হয়েছে । এই পর্বত অগস্ত্য ঋষির আশ্রম, মনুর তপস্যাক্ষেত্র । বলরামও এখানে এসেছিলেন ।
সহাদ্রি
ভারতের পশ্চিম প্রান্তে মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটক রাজ্যে বিস্তৃত। কৃষ্ণা ও গােদাবরী নদীর উৎপত্তিস্থল । এ্যম্বকেশ্বর, মহাবালেশ্বর, পঞ্চবটী প্রভৃতি অনেক তীর্থ এই পর্বতে অবস্থিত । এই পঞ্চবটীতেই রাম, সীতা ও লক্ষ্মণ কিছুকাল বাস করেছিলেন বনবাসের সময় । সীতাহরণ হয়েছিল এই স্থান থেকেই । ছত্রপতি শিবাজীর কর্মক্ষেত্র এটি । শিবনেরী, প্রতাপগড়, পনহালা, বিশালগড়, পুরন্দর, সিংহগড় ও রায়গড় নামে অনেক ইতিহাস প্রসিদ্ধ দুর্গ আছে এই পর্বতে ।
হিমালয়
ভারতের উত্তরে হিমালয় শ্রদ্ধা, বিস্ময় ও গাম্ভীর্য সহ মহারাজাধিরাজ চক্রবর্তী সম্রাটের মতাে বিরাজমান পশ্চিম থেকে পূর্বে । চির হিমমণ্ডিত, বিশ্বের সবথেকে উচু পর্বতমালা আমাদের হিমালয় । বেদ, রামায়ণ, মহাভারত আর অগণিত কবি-সাহিত্যিকের বর্ণনায় সমুফল । শিব-পার্বতীর লীলাভূমি, অতন্দ্র প্রহরীর মতাে আমাদের রক্ষা করছে বিদেশী আক্রমণের হাত থেকে । তাই তাে এর গিরিপথ আক্রমণ ও প্রতিআক্রমণে রক্তাক্ত । অনেক পবিত্র নদ-নদীর উৎপত্তি এখান থেকেই । আমাদের মা গঙ্গা শিব ঠাকুরের জটা থেকে হিমালয়ের বুক বেয়েই নেমে এসেছেন । ভারতের সুপ্রাচীন ঐতিহ্য, সাংস্কৃতিক জীবন, ধর্ম সব কিছুতেই জড়িয়ে আছে এই হিমালয় ।
রৈবতক
গুজরাটের কাথিয়াবাড় জেলায় প্রভাস ক্ষেত্রে অবস্থিত । আধুনিক নাম গিরনার । দ্বারকা থেকে বেশি দূরে নয় । শিব যখন এখানে বাস করছিলেন, তখন দেবতারা তাঁকে কৈলাসে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানাতে এখানে এসেছিলেন । ঋষি দত্রেয়ের সাধনক্ষেত্র এবং শ্রীচৈতন্যদেবও গিরনারে এসেছিলেন । অনেক কুণ্ড ও মন্দিরে পূর্ণ এই স্থানে জৈন তীর্থঙ্কর নেমিনাথের জন্ম হয়েছিল ।
বিন্ধ্যাচল
ভারতের মধ্যভাগ থেকেপূর্বে বিহার পর্যন্ত সুদীর্ঘ পথে এই পর্বতের অবস্থান । নর্মদা ও শােন নদীর উৎপত্তিস্থল । পুরাণের কাহিনী অনুসারে হিমালয়কে দেখে ঈর্ষায় জর্জরিত বিন্ধ্যপর্বত মাথা তুলে দাঁড়াতে থাকে । ফলে সূর্যের হয় গতিরােধ ও সৃষ্টির সংকট। গুরু অগস্ত এগিয়ে এলেন । গুরুকে দেখে শিষ্য মাথা নত করতেই শুরু স্মিত হেসে বললেন, “যতদিন না ফিরি দক্ষিণ থেকে, ততদিন এই অবস্থাতেই থেকো ।” গুরু দক্ষিণ থেকে আর ফিরলেন না । শিষ্যও আর মাথা তুলতে পারল না । বেড়ে গেল পূর্বপশ্চিমেণনর্মদার উৎপত্তিস্থল অমরকন্টক ছাড়াও এটি অনেক মন্দির ও আশ্রম শােভিত একটি মননামুগ্ধকর স্থান ।
আরাবল্লী
রাজস্থানের মধ্যে দিয়ে পূর্ব থেকে পশ্চিমে বিস্তৃত। দেশগৌরব মহারাণা প্রতাপ, রাজপুত বীরদের শৌর্যবীর্য, পরাক্রম, হলদিঘাটের যুদ্ধ এবং বিধর্মী -১৪ - মুসলিম আক্রমণ প্রতিহত করার কাহিনী এই আরাবল্লীর বুকেই । সর্বোচ্চ শিখরের নাম আবু । এটি জৈন সম্প্রদায়ের পবিত্র তীর্থক্ষেত্র ।
Thanks For This Information.
ReplyDelete🙏🙏🙏
Delete