হিন্দুধর্মে কেন গরুকে মাতা বলা হয়েছে ?
সনাতন ধর্মে ৭ ধরনের মাতার উল্লেখ আছে । যেমন:
১. বেদমাতা
২, ধরণী মাতা
৩, ব্রাহ্মণ মাতা
৪. গুরুদেবের মাতা
৫. গােমাতা
৬, নিজের আপন মাতা
৭. রাণী মাতা
আমরা জন্মের পরে জন্মদাত্রী মায়ের দুধ পান করি । কি তার মাংস কি ভক্ষণ করতে পারি ? কখনােই না । ঠিক তেমনি একটি শিশু মায়ের দুধের বিকল্প গরুর দুধ খেয়ে বাঁচতে পারে । তাই গরুকে মাতার সম্মান দেওয়া হয় । বলা হয়েছে; গরুর মল মূত্র, ক্ষীর, দধি, ঘৃত ও রােচণা পরম পবিত্র ও বহুগুণ যুক্ত । এই পাঁচটি পদার্থকে একত্রে পঞ্চগভ্য বলে । হিন্দুদের প্রায় প্রতিটা নিত্য কর্ম, বেদোক্ত মনে শিশুর জন্ম, যৌবনে বিবাহ কিংবা মৃতের আদ্যশ্রাদ্ধে ও সপিন্ডকরণে গরু ও গরুর হতে উৎপনড়ব পঞ্চগভ্য প্রয়ােজন হয় ।
এছাড়া বিষ্ণুপুরাণে গরু হিন্দুধর্মের একটি বিশেষ অবস্থান দখল করে আছে । বলা হয়ে থাকে ভগবান বিষ্ণুর বাহন গােমাতা (গাভী) । অন্যদিকে শিবের বাহন বৃষ ও (ষাঁড়) । শাস্ত্রীয় মতে, দুগ্ধবতী গাভী কে মাথা মনে করা হয়:- 'মাতারঃ সর্বভ,তানং গাবঃ সর্বসূখপ্রদাঃ' । অর্থাৎ সর্বভুতের মাথা বলা হয় ।
চৈতন্যদেব গরু বিষয়ে বলেন, ‘গাে দুগ্ধ খাও তাই গাভী তব মাতা, বৃষ অন্য উপজায় তাহে তেহ পিতা' । গরুকে মাতা বলা হয়ে থাকে কেননা গরুর দুধ মাতৃদুগ্ধের পরিপূরক । অর্থাৎ অকালে মাতৃহীন মানব শিশুর জীবন রক্ষায় গরুর দুধের বিকল্প বা সমকক্ষ কিছুই নেই ।
ব্রহ্মপুরাণে বলা হয় : গরুকে প্রদক্ষিণ করলে সপ্তদীপা পৃথিবীতে ভ্রমণের ফল হয় । তাই সনাতন ধর্মে গরুকে মাতার সম্মান দেওয়া হয়েছে ।