নমস্কার কি এবং কেন ?
প্রণাম বলতে বোঝায় প্রকৃষ্টরূপে নমন বা নমস্কার । শ্রী হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় তার বঙ্গীয় "শব্দকোষ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, প্রণাম চার প্রকারের :
১. অভিবাদন
২. পঞ্চাঙ্গ প্রণাম
৩. অষ্টাঙ্গ প্রণাম
৪. নমস্কার
অভিবাদন :
নিজ বাক্য দ্বারা প্রণাম করি বলে আনত হওয়াকে অভিবাদন বলা হয় । অনেক সময় বাক্য উচ্চারণ না করে শুধু আনত হয়েও অভিবাদন জানানো হয় ।
পঞ্চাঙ্গ প্রণাম :
বাহুদ্বয়, জানুদ্বয়, মস্তক, বক্ষস্থল ও দর্শনেন্দ্রিয় যোগে অবনত হয়ে যে প্রণাম করা হয় তাকে পঞ্চাঙ্গ প্রণাম বলে ।
অষ্টাঙ্গ প্রণাম :
জানু, পদ, হস্ত, বক্ষ, শির, বাক্য, ও দৃষ্টি । প্রণামের এই আটটি অঙ্গ যখন ব্যবহার করা হয় তখন তাকে অষ্টাঙ্গ প্রণাম বলে ।
নমস্কার :
নমস্কার প্রণামের প্রতিশব্দ । নমস্কার তিন প্রকার । কায়িক, বাচিক ও মানসিক ।
নমস্কার সকল যজ্ঞের মধ্যে প্রধান । এটির যথাযথ প্রয়োগ দ্বারাই মানুষ ব্রহ্মকে লাভ করে ।
পবিত্র বেদে বলা হয়েছে, ছোট, বড়, ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শুদ্র, ধনী, গরীব, কৃষক, শ্রমিক সকলকেই নমস্কার কর । এখন কিছু মানুষ হয়তো বলবে যে আমরা ছোটদেরকে কেন নমস্কার করবো ।
হ্যা, এরও উত্তর আছে ।
প্রকৃতপক্ষে আমরা নমস্কার করছি কাকে ?
জীবের মধ্যে অবস্থিত ব্রহ্মকে !
আর জ্ঞানীরা তো জানেন । ব্রহ্ম না ছোট আর না বড়, সে না ধনী আর না গরীব । তিনি সকলের মধ্যেই বিরাজমান । তাই বলছি প্রতিদিন ব্রহ্ম-মূহুর্তে ঘুম থেকে উঠে । পরমেশ্বরের সমগ্র সৃষ্টিকে নমস্কার করুন ।
ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলকেই নমস্কার করুন ।
তাতে আপনার মোটেও সম্মানহানী হবে না । মনে এক অভূতপূর্ব শান্তি লাভ করবেন ।
আর ঈশ্বরকে প্রণাম করতে আবার সম্মানহানী কিসের ?
আরও পড়ুন : মহাভারত কবে লেখা হয়েছিল